Monday, March 16, 2020

পুনম বোস সীমাতীত সময়

সীমাতীত সময়


পুনম বোস


ঐ সময়ের টুটি ধরে ছিন্ন করা মগজের ছাড়পত্র
ছাড়পত্রেই লেখা হলো চিতার আহুতি,
যেখানে একদা ছড়িয়ে দেওয়া হতো চিতাগ্নি তন্ত্র
এক ফুঁয়ে উড়ে যেত রক্ত জিহ্বার  বিষাক্ত গর্জন ------
যার চিহ্ন এখোনও বহন করে চলেছে হৃদযন্ত্রের প্রত্যেক মজ্জা,
এক ভয়ানক আবছায়া হায়নার তীব্র হাসিতে এফোঁড়ওফোঁড়!
ঐ ছিন্ন সময়ের রোজ নামচায় একটি মুখোশ এখনও জল পান করে চলেছে;
বিস্ময় ছিন্ন মাস্তুল এখন রেখে দিতে মরিয়া ঐ কাল কুঠুরি চিতা ভস্ম।

Sunday, March 15, 2020

দেবমিতা বর্ণ বিবর্ণ




বর্ণ বিবর্ণ

"তোমাকে এই গাঢ় রঙটাতে মানাচ্ছে না। তুমি এর চাইতে কোনো হালকা রঙের জামা পরো; বেটার লাগবে। আসলে গায়ের রঙটা চাপা তো..."
"তোমাকে দেখতে খুব সুন্দর। কি সুন্দর টানা টানা চোখ তোমার; আর হাসিটা'ও কি মিষ্টি। শুধু তোমার গায়ের রঙটা ফর্সা হলে..."
"মা আর মেয়ে!- বিশ্বাস হয় না। ঐ অত সুন্দরী মায়ের এইরকম একটা কালিন্দী মেয়ে, ইশ্..."
"ইশ্! মেয়েটা কি কালো। ওর বাবা-মা ওর বিয়ে দেবে কি করে কে জানে। তারমধ্যে বিয়ের দেখাশোনার নামগন্ধ নেই, ঐ কুৎসিত মেয়েকে বিদ্যের জাহাজ বানিয়ে যাচ্ছে বাবা-মা; এরপর বুড়ি হয়ে গেলে ঐ মেয়ের জন্য ছেলে পাবে?..."

না, কথাগুলো কোনো গল্পের অংশ নয়; বরং আমার-আপনার মত কিছু মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একাংশ জুড়ে রয়েছে এই কথাগুলো। আমরা অনেকেই এইধরনের কথা শুনতে অভ‍্যস্ত; আর দুর্ভাগ্যবশতঃ অনেকেই বলতে। আজ যখন চাঁদ থেকে মঙ্গল সর্বত্র মানুষের জয়পতাকা উড়ছে, তখনও মানুষকে বিচার করার একটা পন্থা হিসাবে তার চেহারার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়; তার গুণাগুণের উপর নয় - এটা কি যথেষ্ট লজ্জাজনক নয়? সমাজের একাংশের কাছে এখনও কালো চামড়া নিয়ে জন্মানোটা একটা অপরাধের সামিল; আর, এই অনিচ্ছাকৃত অপরাধটি যদি কোনো মেয়ের দ্বারা ঘটে থাকে - তাহলে তার অবস্থা হয় শোচনীয়। তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে সর্বক্ষণ মনে করিয়ে দিতে থাকে কোন পোশাক তার পরা উচিৎ, কোন রঙ তাকে মানাবে, তার কিরকম সাজা উচিৎ...... এমনকি কখন তার বিয়ে করা উচিৎ।

সেইসব শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে একটা প্রশ্ন আছে - আপনাদের ক্লান্তি আসে না? অযাচিতভাবে যে মূল্যবান পরামর্শগুলো আপনারা দিলেন, কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল - সেগুলোর কোনো প্রয়োজন'ই ছিল না। যে মেয়েটিকে তথা মানুষটিকে আপনারা নিতান্ত অকিঞ্চিৎকর ভাবছেন, একটু খোঁজ নিলে'ই হয়তো জানতে পারতেন সে হয়তো - খুব সুন্দর গান করে, হয়তো পড়াশোনাতেও মন্দ নয়, হয়তো তার আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হয় অনেক মানুষ... কিন্তু আপনাদের সময় কোথায় এত কিছু জানার? আপনাদের মনের ময়লা সেই মেয়েটির গায়ে মুছতে গিয়ে সমস্ত সময় ব‍্যয় হয়ে গিয়েছে যে।

কোনো ফর্সা মানুষের প্রতি বিদ্বেষ এই লেখা'র উৎস নয়; শুধু একটা কথা জানার ইচ্ছা আছে - আমাদের জীবনের বর্ণময়তাই তার বৈচিত্র্য, তার সৌন্দর্য্য;- তাহলে মানুষের চেহারায় বৈচিত্রহীন বিবর্ণতাই কেন অধিকাংশের কাম‍্য? মানুষের সৌন্দর্য্য তো তার চামড়ার রঙে প্রতিফলিত হয় না, প্রতিফলিত হয় তার মননশীলতায় যার বহিঃপ্রকাশে সে হয়ে ওঠে স্বতন্ত্র। মননশীলতায় বৈচিত্র্য যদি প্রশংসার বিষয় হয় তাহলে  সেই বৈচিত্র্য থাকুক না তার চেহারাতেও; প্রতিদিন সে হোক না আরও সুন্দর... আরও বর্ণময়...❤

                                                                       দেবমিতা

দিনাজপুর জেলার ইতিহাস অনুসন্ধান দ্বিতীয় খণ্ড

দিনাজপুর জেলার ইতিহাস অনুসন্ধান ( দ্বিতীয় খণ্ড ) দিনাজপুর জেলার ইতিহাস অনুসন্ধান দ্বিতীয় খন্ড  প্রকাশক : চক্রবর্তী এন্ড সন্স পাবলিকেশন  সম...